Friday 7 January 2011

নয়া দিগন্তের গোলটেবিলে বক্তারা : নতুন বছরে ধর্মকে কলঙ্কের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হবে

স্টাফ রিপোর্টার

নতুন বছরে গণতন্ত্রের সঠিক প্রয়োগ ঘটুক। প্রতিহিংসার ধারা থেকে বেরিয়ে এসে ক্ষমতাসীনদের মধ্যে উদয় হোক শুভবুদ্ধি। সুশাসন ও জননিরাপত্তা প্রতিষ্ঠাসহ দেশের বৃহত্তর স্বার্থে প্রতিষ্ঠিত হোক জাতীয় ঐকমত্য।
গতকাল নিজস্ব সম্মেলন কক্ষে দৈনিক নয়া দিগন্ত আয়োজিত ‘২০১১ : কেমন বাংলাদেশ চাই’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে দেশের খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ, আইনজ্ঞ, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এই মতামত তুলে ধরেন। তারা আরও বলেন, নতুন বছরে ধর্মহীনতা বাড়বে। ধর্মকে একটি কলঙ্কের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হবে।
নয়া দিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিনের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক সচিব আসাফ্উদ্দৌলাহ্, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, সাংবাদিক কলামিস্ট শফিক রেহমান, কলামিস্ট ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক ফরহাদ মজহার, সাংবাদিক মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক রাজনীতি বিষয়ক অধ্যাপক ড. পিয়াস করীম, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক আসমা আব্বাসী, মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সেক্রেটারি আদিলুর রহমান খান, বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক ডা. আবদুল বায়েস ভূঁইয়া এবং এফবিসিসিআই পরিচালক ও বাংলাদেশ লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রাজ্জাক।
অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, নতুন বছরে গণতন্ত্রের সঠিক প্রয়োগ ঘটুক, ব্যক্তির বদলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হোক, সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হোক। কারণ এসবই একসূত্রে গাঁথা। আর এজন্য যে নীতিই প্রণীত হবে, তা হতে হবে সুস্পষ্ট, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। তিনি বলেন, নতুন বছরে প্রতিহিংসার আবহাওয়া থেকে মুক্ত হয়ে ক্ষমতা প্রয়োগকারীদের মধ্যে শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। ব্যক্তিস্বার্থ বাদ দিয়ে জাতীয় স্বার্থে ক্ষমতাসীনরা মনোযোগ দিক, এটাই সবার প্রত্যাশা।
আসাফ্উদ্দৌলাহ্ বলেন, ২০১১ সালেও আমাদের অবস্থার কোনো পরিবর্তন হবে না। র্যাব-পুলিশ হবে আরও নৃশংস, রাজনীতিবিদরা হবে অভদ্র। নতুন বছরে ধর্মহীনতা বাড়বে। ধর্মকে একটি কলঙ্কের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সংস্কৃতি দ্রুত বদলে যাচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে আজ অনেকেই হিন্দি বোঝে। এই বিজাতীয় সংস্কৃতি বন্ধ করতে হলে কেবল রক্ষণাত্মক কৌশল নিলেই হবে না, আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।
আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের জন্য কূটনৈতিক সম্পর্কের দিকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দাবি-দাওয়া পূরণে সরকার ও বিরোধী দলে ঐক্য স্থাপন করতে হবে।
শফিক রেহমান বলেন, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে সমালোচনা করা যেতে পারে। কিন্তু তার নোবেল প্রাইজ নিয়ে দেশের সব মিডিয়া সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর ইন্ধনে যেভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, এটি সবচেয়ে বড় বিস্ময়। মুসা ইব্রাহীম দেশের আসল বিস্ময় নয়।
তিনি বলেন, যে কোনোভাবেই হোক এ দেশের মিডিয়ায় বর্তমানে সরকারের চাপ আছে।
ফরহাদ মজহার বলেন, নতুন বছরে আমি ভালো কিছুর প্রত্যাশা করতে পারছি না। কারণ আমরা একটি অরক্ষিত দেশে বাস করছি। বিডিআরের ঘটনা এবং পিস মিশনের কারণে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর বিজাতীয়করণ ঘটেছে।

No comments:

Post a Comment