Saturday 3 April 2010

শীর্ষ ওলামা মাশায়েখদের উদ্বেগ : সরকার দেশ থেকে ইসলাম নির্মূল করার চেষ্টা করছে : রাবি শিক্ষক, গভর্নরের গ্রেফতার ও শাস্তি দাবি

রকিবুল হক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বোরকা নিষিদ্ধ ও পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের পরিবর্তে রবীন্দ্রসঙ্গীত দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুষ্ঠান উদ্বোধন করার সিদ্ধান্তে তীব্র ক্ষোভ ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে দেশের শীর্ষস্থানীয় ওলামা-মাশায়েখরা বলেছেন, সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দেশ থেকে পবিত্র ইসলাম, ইসলামী মূল্যবোধ, ধর্মীয় চেতনা নির্মূল করার কাজ শুরু করে দিয়েছে। দেশের নব্বইভাগ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে জাতিকে ধর্মহীন করার চেষ্টা সরকারের জন্য বুমেরাং হতে পারে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি ড. একেএম শফিউল ইসলাম ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমানের গ্রেফতার ও শাস্তি দাবি করে তারা বলেন, অতীতে যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে তখনই ইসলাম ও ইসলামী মূল্যবোধ ধ্বংসের উদ্যোগ নিয়েছে। অবিলম্বে ড. শফিউল ইসলাম ও ড. আতিউর রহমানকে বহিষ্কার ও গ্রেফতার করা না হলে দেশের সর্বস্তরের জনগণকে নিয়ে সরকারবিরোধী তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। তারা বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের শত বছরের ঐতিহ্য মাদ্রাসা শিক্ষাকে জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে একের পর মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার কাজ শুরু করে। ইসলামের বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্রের পর এবার সরকার বোরকা নিষিদ্ধ করার দুঃসাহস দেখিয়েছে। ইসলামী আদর্শে বিশ্বাসী সব শ্রেণীর, সব পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, তীব্র আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারের ইসলাম ও দেশবিরোধী চক্রান্ত রুখে দেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রীদের বোরকা পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে কর্তৃপক্ষ। গত ৩১ মার্চ অর্থমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি অনুষ্ঠান কোরআন তিলাওয়াতের পরিবর্তে রবীন্দ্রসঙ্গীত দিয়ে শুরু করা হয়।
ইসলামী ঐক্যজোট চেয়ারম্যান মুফতি ফজলুল হক আমিনী বলেন, বর্তমান ইসলামবিরোধী সরকারের মূল পরিকল্পনা হচ্ছে দেশ থেকে চিরতরে ইসলাম ও ইসলামী আদর্শ উত্খাত করা। তারা এই অ্যাসাইনমেন্ট নিয়েই ক্ষমতায় এসেছে। একইভাবে তুরস্ক ও স্পেনে বোরকা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। সরকার মুখে ইসলামের কথা বললেও তাদের মূল কাজই হচ্ছে তাদের প্রভুদের কথামতো ইসলামকে ধ্বংস করা। রবীন্দ্রসঙ্গীত এখন অনুষ্ঠানের উদ্বোধনীতে ব্যবহার করছে। কিছুদিন পরে সরকার মিলাদ মাহফিলেও রবীন্দ্রসঙ্গীত বাধ্যতামূলক করবে। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেছেন দেশে একমাত্র আওয়ামী লীগই হচ্ছে ইসলামের পক্ষের শক্তি। একথা দ্বারাই প্রমাণ করে তারা ইসলামকে ভয় পায় এবং ইসলামের নামেই তারা ক্ষমতায় থাকতে চায়। তাদের ইসলাম প্রীতির নমুনাই হচ্ছে মাদ্রাসা শিক্ষা ধ্বংস করা, বোরকা নিষিদ্ধ করা এবং কোরআন তিলাওয়াতের পরিবর্তে রবীন্দ্রসঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু করা। সময় এসেছে ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগের হঠকারিতার জবাব দেয়ার। আওয়ামী লীগের এসব কর্মসূচি চলতে থাকলে দেশে ইসলামী মূল্যবোধ বিপর্যয়ে পড়বে।
খেলাফত মজলিস আমির মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক বলেন, সরকার বিদেশিদের সঙ্গে চুক্তি করে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে ক্ষমতায় এসেছে। তাই কোরআন তিলাওয়াতের পরিবর্তে রবীন্দ্রসঙ্গীত দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের বোরকা পরা নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি সরকারের পুরনো অভ্যাস। একজন মুসলামন হিসেবে আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই। এর প্রতিবাদ করা প্রতিটি মুসলমানের নৈতিক, সাংবিধানিক ও ইমানি দায়িত্ব। এসবের বিরুদ্ধে ইসলামী দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে প্রতিবাদ জানাতে হবে।
খেলাফত আন্দোলনের আমির মাওলানা আহমদুল্লাহ আশরাফ বলেন, আল্লাহর কালামের পরিবর্তে রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন বিধর্মীদের প্রতি ভালোবাসা এবং অনৈসলামিক কাজকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য করা হয়েছে। বাংলাদেশের নব্বইভাগ মানুষ মুসলমান। কাজেই কোনো বিবেকবান, দেশপ্রেমিক শিক্ষিত মানুষ এ কাজ করতে পারে না। ভারতের প্রতি আনুগত্যশীল হয়ে অতিভক্তির প্রমাণ দেয়ার জন্য মুসলমান হয়েও সরকার এটা করেছে। মুসলমান ও ইসলামী আদর্শের বিরুদ্ধে সরকার এখন নানামুখী ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তে লিপ্ত। দেশের মানুষের পক্ষে এটা বুঝতে আর বাকি নেই। বাংলাদেশ ও ইসলামের বিরুদ্ধে যারা এ কাজ করছে, মুসলমান হয়ে থাকলে প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তা না হলে জনগণ এর সমুচিত জবাব দেবে। বাংলাদেশের কোনো প্রতিষ্ঠান বোরকা পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার দুঃসাহস দেখাতে পারে, এটা ভাবতেও অবাক লাগে।
আহকামে শরীয়াহ হেফাজত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ড. মাওলানা আবু ইউসুফ মাদানী বলেন, তিন লাখ মসজিদের বাংলাদেশে বোরকা নিষিদ্ধ হবে আর পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের পরিবর্তে রবীন্দ্রসঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু করা হবে এটা কোনো মুসলমান একবিন্দু রক্ত থাকতে মেনে নিতে পারে না। এর প্রতিবাদ করা সবার ইমানি দায়িত্ব। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি ড. একেএম শফিউল ইসলাম ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমানের গ্রেফতার ও শাস্তি দাবি করে তিনি বলেন, অতীতে যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে, তখনই ইসলাম ও ইসলামী মূল্যবোধ ধ্বংসের উদ্যোগ নিয়েছে। এবারও তারা একই পথে এগুচ্ছে। সরকার তাদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হলে এর জন্য তাদের চরম মূল্য দিতে হবে।
নেজামে ইসলাম পার্টি ও ইসলামী ঐক্যজোট মহাসচিব মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী বলেছেন, বর্তমান ধর্মনিরপেক্ষ সরকার এখন এসবই করতে চায়। বাংলাদেশের মতো দেশে বোরকা নিষিদ্ধ করা ও রবীন্দ্রসঙ্গীত দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু সরকারের অনৈসলামীকরণ প্রক্রিয়ার অংশ। তিনি বলেন, রবীন্দ্রসঙ্গীত দিয়ে এদেশে কোনোদিন অনুষ্ঠান শুরু হয়নি। এটা ধর্মনিরপেক্ষ দেশ নয় যে, কোরআন তিলাওয়াতে সমস্যা হবে। তিনি বলেন, এ সরকার ইসলামবিরোধী। তারা আল্লাহ বলতে চায় না, সৃষ্টিকর্তা বলতে চায়। বিসমিল্লাহর পরিবর্তে পরম করুণাময় আল্লাহ, জিন্দাবাদের পরিবর্তে জয়বাংলা বলতে চায়। তারা যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই তাদের কার্যক্রমে অনৈসলামিক ধ্যান-ধারণা ফুটে ওঠে। এবার ক্ষমতায় আসার পর ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষানীতি চালুর ষড়যন্ত্র, ফতোয়া নিষিদ্ধ, সম্পত্তিতে নারী-পুরুষের সমানাধিকার দেয়ার উদ্যোগ নতুন কিছু নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, সরকার সংবিধান থেকে বিসমিল্লাহ এবং সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস শব্দগুলো উঠিয়ে দিয়ে দেশকে সেকুলার রাষ্ট্র বানানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে। সরকারের এ ইসলামবিরোধী কাজের প্রতিবাদ করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী বলেন, বর্তমান সরকার দেশকে ধর্মনিরপেক্ষতার দিকে নেয়ার চেষ্টা করছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বোরকা পরা নিষিদ্ধ করার ঘটনা সেই ধারাবাহিকতার অংশমাত্র। এ বিষয়ে মুসলমানদের সচেতন হতে হবে।
ইসলামী আন্দোলন ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন বলেন, কোরআন তিলাওয়াতের পরিবর্তে রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন সরাসরি ইসলামের ওপর চরম আঘাতের শামিল। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মুসলমানদের অন্তরে চরম আঘাত হানা হয়েছে। এর তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, হিজাব ইসলামের মৌলিক বিধান। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীদের বোরকা পরা নিষিদ্ধ করে শরিয়তের এই বিধানের ওপর আঘাত হানা হয়েছে। এসব বিষয় দেশের মানুষ কোনোদিন মেনে নেবে না। এভাবে ইসলামের ওপর একের পর এক আঘাত হানার ঘটনায় সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, এদেশ পীর-আউলিয়ার দেশ। এখানে যেভাবে মসজিদ, মাদ্রাসা ও ইসলামের ওপর আঘাত হানা হচ্ছে তার পরিণতি হবে ভয়াবহ। ১৬ এপ্রিল মুক্তাঙ্গনে ইসলামী আন্দোলনের পক্ষ থেকে লক্ষাধিক মানুষের সমাবেশ ঘটিয়ে এর দাঁতভাঙা জবাব দেয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তাহফিজে হারামাইন পরিষদের সভাপতি মাওলানা সাদেক আহমদ সিদ্দিকী বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. শফিউল ইসলামকে অবিলম্বে বহিষ্কার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর একের পর এক ইসলামবিরোধী সিদ্ধান্ত নিতে থাকে। তারা দিনবদলের নামে ইসলাম বদলের কাজ করে যাচ্ছে। রাষ্ট্রপতি যখন সব ধরনের ফতোয়া নিষিদ্ধ করা হবে বলে ঘোষণা দেন, প্রধানমন্ত্রী যখন উত্তরাধিকার আইন বদলাতে চান, পাটমন্ত্রী যখন ধর্মকে মদের নেশার সঙ্গে তুলনা করেন এবং সরকারি দলের সাধারণ সম্পাদককে যখন আলেম-ওলামাদের কটাক্ষ করে বক্তব্য দিতে দেখা যায়, তখন বুঝতে কষ্ট হয় না, বর্তমান সরকার দিনবদলের নামে ইসলাম বদলের চেষ্টা করছে। সরকারের এ আশা পূরণ হবে না।
আওয়ামী লীগ সমর্থক ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আলহাজ মিছবাহুর রহমান চৌধুরী বলেছেন, কোরআন তিলাওয়াতের পরিবর্তে রবীন্দ্রসঙ্গীত দিয়ে অনুষ্ঠান শুরুর ধৃষ্টতা যে দেখায় তাকে কোনো অবস্থায় ক্ষমা করা যায় না। বাংলাদেশের শতকরা নব্বইভাগ মানুষের ধর্মবিশ্বাস হচ্ছে ইসলাম। ধর্ম বিশ্বাসের ওপর আঘাত দেয়া সংবিধানেরও লঙ্ঘন। যারাই এটা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তিনি বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের বোরকা পরা নিষিদ্ধ করে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের মনে চরমভাবে আঘাত দেয়া হয়েছে। এটা করার অধিকার কারও নেই।
বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা আখতার হোসাইন বোখারী বলেন, আমরা আওয়ামী লীগ করি বলে ইসলামের বিপক্ষে কোনো দিনই অবস্থান নেব না। বাংলাদেশে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের পরিবর্তে রবীন্দ্রসঙ্গীত দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করা হবে, অন্ততপক্ষে এটা সহ্য করার মতো নয়। বোরকা হচ্ছে নারীদের জন্য ইসলামের একটি বিধান। এটা নিষিদ্ধ করার অধিকার কারও নেই। মুসলমানদের সাংবিধানিক অধিকার হচ্ছে বোরকা পরা। এ অধিকার কেউ আদেশ জারি করে হরণ করতে পারে না। এ ধরনের ইসলামবিরোধী ও অসাংবিধানিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো সবার দায়িত্ব।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/04/04/25831

প্রচলিত আদালতেই সম্ভব : দেলোয়ার

সমকাল | শনিবার | ৩ এপ্রিল ২০১০ | ২০ চৈত্র ১৪১৬ | ১৭ রবিউস সানি ১৪৩১

প্রসঙ্গ : যুদ্ধাপরাধের বিচার
সমকাল প্রতিবেদক
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনাল নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে বিএনপি। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের পরিবর্তে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ওয়াদা ভঙ্গ করেছে বলে অভিযোগ করেছে দলটি। বলেছে_ হত্যা, লুণ্ঠন, অগি্নসংযোগ, ধর্ষণ ও অপহরণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রচলিত আদালতেই সম্ভব। এ জন্য কোনো বিশেষ আদালত, ট্রাইব্যুনাল কিংবা তদন্ত কমিটি গঠনের প্রয়োজন নেই। গতকাল নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার
দেলোয়ার হোসেন আনুষ্ঠানিকভাবে দলের এ অবস্থান জানান। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দলের অবস্থান স্পষ্ট করার সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্তের কথা জানাতেই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থায় বিএনপি কী করবে_ এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'আমাকে হত্যা করতে এলে আমি তো চেয়ে চেয়ে দেখব না। কেউই বসে থাকে না। বিএনপিও বসে থাকবে না।'
দেলোয়ার বলেন, সরকার যুদ্ধাপরাধের বিচার থেকে সরে এসে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের কথা বলছে। এসব অপরাধ সত্যিই কেউ করে থাকলে তাদের বিচারে বিএনপির আপত্তি নেই। কিন্তু এ অপরাধের বিচার ফৌজদারি কার্যবিধিতেই করা সম্ভব। এ জন্য কোনো বিশেষ আদালত বা তদন্ত কমিটি তো নয়, আইনের নতুন কোনো সংশোধনী আনাও আইনের চোখে গ্রহণযোগ্য হবে না। এ ব্যাপারে বিডিআর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি সেই মতামত দিয়েছেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে সরকার তিন সদস্যের বিচারক প্যানেল, সাত সদস্যের তদন্তকারী প্যানেল এবং ১২ সদস্যের আইনজীবী প্যানেলের নাম ঘোষণা করেছে।
'তদন্ত সংস্থা ও আইনজীবী প্যানেলে সদস্যরা একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সদস্য' দাবি করে বলেন, ওই সদস্যরা ওয়ান-ইলেভেনের সরকারের সময়ও ছিলেন। তারা নিজ দলের লোকদের অপরাধী না বলে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতাদের অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করবেন। এদের কাছে সুষ্ঠু বিচার আশা করা যায় না।
তিনি আরও বলেন, প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে কখনোই কেউ বিরোধিতা করেনি। সব সময় বলা হয়েছে, বিচার যেন স্বচ্ছ হয়। বিচার যেন প্রকৃত অপরাধীদের হয় এবং বিষয়টি রাজনীতিকরণ যেন না হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, 'টোকেন বিচার করা হবে'। তার মানে সব অপরাধীর বিচার করবে না সরকার। শুধু যাদের প্রতিপক্ষ মনে করবে তাদের বিচার হবে। এটি ন্যায়বিচার পরিপন্থী এবং অন্যায়।
সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে চায় না-কি দ্রব্যমূল্য, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি সমস্যা এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে বিপর্যস্ত ও বিক্ষুব্ধ জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে দিতে চায়?
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সরকারিভাবে যাদের যুদ্ধাপরাধী বলে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার তাদের মুক্তি দিয়েছিল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আওয়ামী লীগ সরকার করেনি_ এটি ঐতিহাসিকভাবে সত্য।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সারোয়ারী রহমান, যুগ্ম-মহাসচিব রিজভী আহমেদ, সহ-দফতর সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, মহিলা দলের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফেরদাউস আক্তার ওয়াহিদ প্রমুখ।
এর আগে সকালে নবগঠিত মহিলা দলের নেত্রীরা বিএনপি মহাসচিবের নেতৃত্বে জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করেন।

রাবি সমাজবিজ্ঞান বিভাগে বোরখা নিষিদ্ধ!

Fri 2 Apr 2010 10:25 PM BdST

rtnn রাবি, ০২ এপ্রিল (আরটিএনএন ডটনেট)-- রাজশা‌হী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রীদের বোরখা পরে ক্লাস না করার কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. এ কে এম শফিউল ইসলাম। এরআগে শিক্ষক নিয়োগে দাড়ি না রাখা ও পাঞ্জাবি-পায়জামা না পরার শর্তারোপ করেছিলেন তিনি।

বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে শর্তারোপ এবং বোরখা নিষিদ্ধ করায় শিক্ষার্থী ও অবিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে দলীয়ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে হিড়িক পড়ে যায়। এসময় সমাজবিজ্ঞান বিভাগে নতুন চারজন শিক্ষক নিয়োগ পায়।

শিক্ষক আমিনুল ইসলামকে বিভাগের চেয়ারম্যান দাড়ি না রাখা ও পাঞ্জাবি-পায়জামা না পরার শর্তে নিয়োগ দেয়। বিষয়টি নিয়ে সারা ক্যম্পাসে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

সম্প্রতি বিভাগের চেয়ারম্যান ও সদ্য নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক নাজমুল হকের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ছাত্রীদের বোরখা পরার জন্য ক্লাসে নানা ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছে।

বোরখা পরার অপরাধে ক্লাস থেকে বের করে দেয়া ও দাড় করিয়ে রাখাসহ পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেয়ার অব্যাহত হুমকি দেয়া হচ্ছে। 'ক্লাসে মধ্যযুগীয় পোশাক বোরখা পরা যাবে না এবং এটা সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের কোন পোশাক হতে পারে না' বলে ছাত্রীদের সতর্ক করে দেয়া হয়।

কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ফলে যেসব ছাত্রী চার/পাঁচ বছর ধরে শ্রেণী কক্ষে বোরখা পরে আসতো তারাও বোরখা খুলে আসতে বাধ্য হচ্ছে। অনেকে ক্লাস করা বন্ধ করে দিয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এ কে এম শফিউল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এটি বিভাগীয় কোন সিদ্ধান্ত নয়। কিন্তু আমি আমার ক্লাসে কোন ছাত্রীকে বোরখা পরে ক্লাস করতে দেব না।’

তিনি আরো বলেন, ‘কোন সাংবাদিক এ সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশ করলে তাকে দেখে নেয়া হবে।’

আরটিএনএন ডটনেট/প্রতিনিধি/এমএম_২০২৫ ঘ.

http://rtnn.net/details.php?id=23233&p=1&s=5

বিএনপির অভিযোগ যুদ্ধাপরাধের বিচারকে বাধাগ্রস্তের শামিল

Sat 3 Apr 2010 8:05 PM BdST

rtnnঢাকা, ০৩ মার্চ (আরটিএনএন ডটনেট)-- যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির অভিযোগ বিচারকে বাধাগ্রস্ত করার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ। তিনি বলেছেন, বিরোধী দলের কেউ মানবতাবিরোধী অপরাধ করলে সেক্ষেত্রে তাকে বিচারের বাইরে রাখা সম্ভব নয়।

শনিবার নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

'সরকার বিরোধী দলকে ঘায়েল করতে এ বিচারকে ব্যবহার করছে'- বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের এমন অভিযোগ নাকচ করে দেন আইনমন্ত্রী।

তিনি বলেন, কাউকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানির উদ্দেশ্যে নয়, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় একাত্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করা হচ্ছে।

বিচার চলাকালে আইনজীবী প্যানেলে আরো আইনজীবী যুক্ত হবে বলেও জানান ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ।

আওয়ামী লীগেও যুদ্ধাপরাধী রয়েছে বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগ তুলে ধরে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে মন্ত্রী বলেন, ‘কে আপরাধী তা খুঁজে বের করার দায়িত্ব তদন্ত সংস্থার। এ বিষয়ে অন্য কারো মন্তব্য করা সমীচীন হবে না।’

শফিক বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে তারা খুবই দক্ষ এবং সৎ। এজন্য এ বিচার নিয়ে সন্দেহ প্রকাশের কোনো সুযোগ নেই।

প্রসঙ্গত, গত ৩০ মার্চ বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘রাজনৈতিক হয়রানির উদ্দেশ্যে উনারা (সরকার) ইচ্ছামত যুদ্ধাপারাধীর তালিকা করেছেন। এতে সত্যিকারের যুদ্ধাপারাধীদের চিহ্নিত করে বিচার না করার প্রশ্ন জনমনে তীব্র হয়ে দেখা দিয়েছে।’

গত ৩১ মার্চ বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা। যুদ্ধাপরাধের বিচারের আগে তাদের আশ্রয়দাতাদের বিচার করা উচিত।’

আরটিএনএন ডটনেট/এমইউএ/এমএম_১৭৫৫ ঘ.

http://rtnn.net/details.php?id=23261&p=1&s=1

যুদ্ধাপরাধের বিচার সম্পর্কে সরকার জাপার সঙ্গে আলোচনা করেনি: এরশাদ



Sat 3 Apr 2010 7:48 PM BdST

rtnnঢাকা, ০৩ এপ্রিল (আরটিএনএন ডটনেট)-- সরকারের শরীক দল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধের বিচার সম্পর্কে জাতীয় পার্টির সঙ্গে কোনোরূপ আলোচনা করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদ। তবে সরকার আলোচনা না করলেও এ বিচার বিষয়ে জাতীয় পার্টির সম্মতি রয়েছে বলে জানান তিনি।

শনিবার বিকালে বনানীস্থ জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে দলের প্রেসিডিয়াম বৈঠক শুরুর আগে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

দেশের বর্তমান বিদ্যুত ও পানি সঙ্কট বর্তমান সরকারের সৃষ্ট নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ সমস্যা সমাধানের জন্য কিছুটা সময় লাগবে।

সঙ্কটের সমাধান না হওয়া পর্যন্ত দেশবাসীকে একটু ধৈর্য ধারণ করতে অনুরোধ জানান এরশাদ।

শারীরিক অসুস্থতার কারণে বেগম রওশন এরশাদকে নিয়ে আগামী রবিবার সিঙ্গাপুর যাবেন বলে সাংবাদিকদের জানান তিনি।

http://rtnn.net/details.php?id=23259&p=1&s=1

Thursday 1 April 2010

কোটালীপাড়ায় ১৯৪ যুদ্ধাপরাধীর তালিকা প্রকাশ : অনেকেই আ’লীগ কমিটিতে রয়েছেন

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ১৯৪ জন যুদ্ধাপরাধীর তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। গতকাল কোটালীপাড়ার মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশ থেকে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়। এ তালিকায় কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পদে বহাল নেতাকর্মীদের নাম রয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে বক্তারা বলেন, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটির শীর্ষ পদে ’৭১-এর সশস্ত্র রাজাকার রয়েছে। তাদের নাম রাজাকারের তালিকায়ও রয়েছে। এসব রাজাকারকে দল থেকে বহিষ্কার ও বিচার করতে হবে।
যুদ্ধাপরাধ মামলায় ১ জন রিমান্ডে
গোপালগঞ্জে যুদ্ধাপরাধ মামলায় জয়নাল মল্লিক (৬০) নামের এক ব্যক্তিকে ৩ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। গোপালগঞ্জ থানা পুলিশ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দীলিপ কুমার ভৌমিকের আদালতে এ সংক্রান্ত মামলার আসামি জয়নালকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেছিলেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ১৯৭১ সালের ১০ জুলাই সদর উপজেলার নখড়ীরচর গ্রামের চান মাওলানা ওরফে কোমর উদ্দিন, জয়নাল মল্লিক ও পার্শ্ববর্তী পারকুশলী গ্রামের রেজাউল মাওলানার নেতৃত্বে ২০/২৫ জন লোক নখড়ীরচর গ্রামের আবদুর রাজ্জাকের বাড়িতে এসে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। একপর্যায়ে তারা আবদুর রাজ্জাককে নৌকায় করে ধরে নিয়ে গোপালগঞ্জের বধ্যভূমিতে গুলি করে হত্যা করে।
এ ঘটনায় নিহতের ভাতিজা খলিলুর রহমান শেখ গত বছর ১৭ জুলাই গোপালগঞ্জ সদর থানায় ওই ৩ জনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলা করেন (মামলা নং-১৩, তাং ১৭.০৭.০৯)।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/04/02/25484

'প্রকৃত' যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায় বিএনপি

Shamokal শুত্রুবার | ২ এপ্রিল ২০১০ | ১৯ চৈত্র ১৪১৬ | ১৬ রবিউস সানি ১৪৩১

বিশেষ প্রতিনিধি
সরকারি দলের নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী \'প্রকৃত\' যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায় প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। সরকার বর্তমানে \'মানবতাবিরোধী\' অপরাধের কথা বলে যুদ্ধাপরাধের বিচার করলে তা \'রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ\' করতে চায় বলে সন্দেহ প্রকাশ করছে দলটি।
এমনকি \'আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট\' অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হওয়ার ব্যাপারেও প্রশ্ন তুলছে তারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ অভিমত ব্যক্ত করা হয়। বৈঠকে একই সঙ্গে চলমান বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের ভয়াবহ সংকটের মধ্যে সরকার জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে অভিমত ব্যক্ত করে দলটি। সূত্র জানায়, বৈঠকে যুদ্ধাপরাধের বিচারের পাশাপাশি চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, জনদুর্ভোগের বিষয়, দলের সাংগঠনিক অবস্থা, বিভাগীয় মহাসমাবেশের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত আজ দুপুর ১২টায় দলের নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তা তুলে ধরবেন।
রাত সাড়ে ৮টায় গুলশান কার্যালয়ে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে বৈঠক শুরু হয়ে পৌনে ১১টায় শেষ হয়। বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, এম শামসুল ইসলাম, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, বেগম সারোয়ারী রহমান, এমকে আনোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র জানায়, বৈঠকে বলা হয়, বিএনপি \'প্রকৃত\' যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায়। \'প্রতিহিংসামূলক\' বিচার নয়। সরকার যে \'মানবতাবিরোধী\' বিচারের কথা বলছে_ তা আগের দেওয়া অঙ্গীকারের সঙ্গে কোনো মিল নেই। মানবতাবিরোধী বিচার \'ওয়ার্ল্ড ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট\'-এর অধীন করা হয়। কিন্তু সরকার তা করছে না বলে অভিমত ব্যক্ত করা হয়। বৈঠকে আরও বলা হয়, সরকার নির্বাচনের আগে জনগণকে দেওয়া কোনো ওয়াদাই পূরণ করতে পারছে না। তারা অবিলম্বে পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসসহ সব নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের জোর দাবি জানান।
সূত্র জানায়, বৈঠকে বিএনপির বিভাগীয় মহাসমাবেশ দ্রুত সম্পন্ন করে ঢাকায় মহাসমাবেশ থেকে দেশ ও জনস্বার্থ রক্ষায় সরকারবিরোধী আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণার ব্যাপারে আলোচনা হয়। বৈঠকে আগামী ১৮ এপ্রিল খুলনা বিভাগ, ২৮ বা ২৯ এপ্রিল বরিশাল, ৪ মে রাজশাহী বিভাগ এবং পরে সিলেট বিভাগে মহাসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে দ্রুত বিরোধপূর্ণ ঢাকা মহানগরসহ দলের অবশিষ্ট জেলাগুলোতে কমিটি গঠনের ব্যাপারেও আলোচনা হয়।
দেলোয়ারের ব্রিফিং
এর আগে দুপুরে প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে বিএনপির আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, আমরা প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিপক্ষে নই। তবে এ বিচার নিয়ে উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা চলছে। যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থে সরকারের মন্ত্রীরা তাদের বিরুদ্ধে নানা আবোল-তাবোল অবান্তর মন্তব্য করে চলছেন।
আরমানিটোলার নিজ বাসায় সাংবাদিকদের দেওয়া এক ব্রিফিংয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, \'আমরা বারবার বলে আসছি, প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। এটা আমাদের দলের অবস্থান। কিন্তু যেখানে সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে বিচার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে, তাতে কীভাবে নিরপেক্ষ তদন্ত হবে?\' তিনি বলেন, \'সত্যিকার অপরাধের সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে ন্যায়বিচার নিয়ে জনমনে সন্দেহ দেখা দেবে।\'
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামের মহাসমাবেশে খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে অতীতের মতো এবারও পরোক্ষভাবে যুদ্ধাপরাধীদের সমর্থন দিয়েছেন_ আওয়ামী লীগের এ অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা অসৎ উদ্দেশ্যে এসব অবান্তর মন্তব্য করছেন।
খোন্দকার দেলোয়ার অভিযোগ করে বলেন, মহাজোট সরকার জনপ্রিয়তা প্রমাণে ভোলা-৩ আসনের উপনির্বাচনে জয়ের সবরকম কারসাজি সম্পন্ন করেছে।

প্রমাণিত না হওয়ার আগে যুদ্ধাপরাধী বলা যাবে না: টিপু

Thu 1 Apr 2010 9:10 PM BdST

ঢাকা, ০১ এপ্রিল (আরটিএনএন ডটনেট)-- একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচারে গঠিত বিশেষ ট্রাইব্যুনালের প্রধান আইনজীবী গোলাম আরিফ টিপু বলেছেন, অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ার আগে কাউকে যুদ্ধাপরাধী বলা যাবে না।

বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো ট্রাইব্যুনাল কার্যালয়ে এসে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীরা যাতে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে না পারে সে বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ট্রাইব্যুনালের প্রধান আইনজীবী।

অভিযোগ থাকলেই হবে না মন্তব্য করে টিপু বলেন, প্রমাণের আগে কাউকে দোষী বলা আইন বিরুদ্ধ। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে যুদ্ধাপরাধী বলা যাবে না।

তদন্তরে জন্য ইতিমধ্যেই তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তদন্তকালীন সময়ে অভিযুক্তদের দেশ ত্যাগ ঠেকাতে সরকারকেই কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।

ট্রাইব্যুনালের প্রধান আইনজীবী বলেন, ১৯৭১ সালে যাদেরকে হত্যা করা হয়েছে এবং যারা শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন তাদের আত্মীয়-স্বজনদের দেয়া তথ্য, সংবাদপত্র আর বেতারের প্রতিবেদন, তথ্যচিত্র এবং ডকুমেন্টারি তদন্তকাজে ব্যবহার করা হবে।

তিনি বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যারা মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধ করেছে তাদের বিচার করতে না পারলে দেশে অপরাধ ও দুর্নীতির মাত্রা বেড়ে যাবে।

যুদ্ধাপরাধের বিচারে শতভাগ স্বচ্ছতা অবলম্বনের নিশ্চয়তা দিয়ে তিনি বলেন, কেবল নির্দিষ্টভাবে যাদের সম্পর্কে অভিযোগ পাওয়া যাবে তাদেরকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে।

http://rtnn.net/details.php?id=23208&p=1&s=3