Saturday 3 April 2010

প্রচলিত আদালতেই সম্ভব : দেলোয়ার

সমকাল | শনিবার | ৩ এপ্রিল ২০১০ | ২০ চৈত্র ১৪১৬ | ১৭ রবিউস সানি ১৪৩১

প্রসঙ্গ : যুদ্ধাপরাধের বিচার
সমকাল প্রতিবেদক
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনাল নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে বিএনপি। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের পরিবর্তে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ওয়াদা ভঙ্গ করেছে বলে অভিযোগ করেছে দলটি। বলেছে_ হত্যা, লুণ্ঠন, অগি্নসংযোগ, ধর্ষণ ও অপহরণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রচলিত আদালতেই সম্ভব। এ জন্য কোনো বিশেষ আদালত, ট্রাইব্যুনাল কিংবা তদন্ত কমিটি গঠনের প্রয়োজন নেই। গতকাল নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার
দেলোয়ার হোসেন আনুষ্ঠানিকভাবে দলের এ অবস্থান জানান। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দলের অবস্থান স্পষ্ট করার সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্তের কথা জানাতেই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থায় বিএনপি কী করবে_ এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'আমাকে হত্যা করতে এলে আমি তো চেয়ে চেয়ে দেখব না। কেউই বসে থাকে না। বিএনপিও বসে থাকবে না।'
দেলোয়ার বলেন, সরকার যুদ্ধাপরাধের বিচার থেকে সরে এসে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের কথা বলছে। এসব অপরাধ সত্যিই কেউ করে থাকলে তাদের বিচারে বিএনপির আপত্তি নেই। কিন্তু এ অপরাধের বিচার ফৌজদারি কার্যবিধিতেই করা সম্ভব। এ জন্য কোনো বিশেষ আদালত বা তদন্ত কমিটি তো নয়, আইনের নতুন কোনো সংশোধনী আনাও আইনের চোখে গ্রহণযোগ্য হবে না। এ ব্যাপারে বিডিআর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি সেই মতামত দিয়েছেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে সরকার তিন সদস্যের বিচারক প্যানেল, সাত সদস্যের তদন্তকারী প্যানেল এবং ১২ সদস্যের আইনজীবী প্যানেলের নাম ঘোষণা করেছে।
'তদন্ত সংস্থা ও আইনজীবী প্যানেলে সদস্যরা একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সদস্য' দাবি করে বলেন, ওই সদস্যরা ওয়ান-ইলেভেনের সরকারের সময়ও ছিলেন। তারা নিজ দলের লোকদের অপরাধী না বলে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতাদের অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করবেন। এদের কাছে সুষ্ঠু বিচার আশা করা যায় না।
তিনি আরও বলেন, প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে কখনোই কেউ বিরোধিতা করেনি। সব সময় বলা হয়েছে, বিচার যেন স্বচ্ছ হয়। বিচার যেন প্রকৃত অপরাধীদের হয় এবং বিষয়টি রাজনীতিকরণ যেন না হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, 'টোকেন বিচার করা হবে'। তার মানে সব অপরাধীর বিচার করবে না সরকার। শুধু যাদের প্রতিপক্ষ মনে করবে তাদের বিচার হবে। এটি ন্যায়বিচার পরিপন্থী এবং অন্যায়।
সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে চায় না-কি দ্রব্যমূল্য, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি সমস্যা এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে বিপর্যস্ত ও বিক্ষুব্ধ জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে দিতে চায়?
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সরকারিভাবে যাদের যুদ্ধাপরাধী বলে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার তাদের মুক্তি দিয়েছিল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আওয়ামী লীগ সরকার করেনি_ এটি ঐতিহাসিকভাবে সত্য।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সারোয়ারী রহমান, যুগ্ম-মহাসচিব রিজভী আহমেদ, সহ-দফতর সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, মহিলা দলের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফেরদাউস আক্তার ওয়াহিদ প্রমুখ।
এর আগে সকালে নবগঠিত মহিলা দলের নেত্রীরা বিএনপি মহাসচিবের নেতৃত্বে জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করেন।

No comments:

Post a Comment