Wednesday 29 June 2011

সংবিধান সংশোধন বিল : তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করে মন্ত্রিসভায় অনুমোদন











কাদের গনি চৌধুরী
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের সুপারিশসহ সংবিধানে বেশ কিছু মৌলিক পরিবর্তন এনে সংবিধান সংশোধন কমিটির সুপারিশ সংবলিত প্রস্তাব গতকাল মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে। এটি বিল আকারে এখন সংসদে উত্থাপন করা হবে। সংশোধিত সংবিধানের প্রস্তাবনা থেকে সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস বাতিল করে ধর্মনিরপেক্ষতা পুনর্বহাল রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। সংবিধানের শুরুতে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম (দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে) এর পরিবর্তে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম (দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে)/পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার নামে’ সংযোজন করার প্রস্তাবও গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া সংবিধানে শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার প্রস্তাবও রয়েছে। পাশাপাশি দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অফিস-আদালতে সর্বত্র শেখ মুজিবের ছবি টানানো বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব অনুমোদন হয়। একই সঙ্গে অনুমোদন দেয়া হয়েছে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংখ্যা ৫০টি করার প্রস্তাব। বর্তমানে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংখ্যা ৪৫টি।সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল মন্ত্রিসভার বৈঠকে সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত বিশেষ কমিটির সুপারিশ সংবলিত প্রস্তাবে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, মন্ত্রিসভার বৈঠকে দীর্ঘ আলোচনার পর সংবিধান সংশোধন কমিটির সুপারিশ সংবলিত প্রস্তাব হুবহু অনুমোদন করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদিত ‘সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১’-এ আরও বলা হয়েছে, রাষ্ট্রধর্ম হবে ইসলাম, তবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ অন্যান্য ধর্মপালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও সমঅধিকার নিশ্চিত করবে। ’৭২-এর সংবিধানের চার মূলনীতি জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা পুনঃপ্রবর্তন, জাতীয় পরিচয় ‘বাঙালি’ এবং নাগরিক হিসেবে ‘বাংলাদেশী’, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা হিসেবে চিহ্নিত করে সর্বোচ্চ শাস্তি, এছাড়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছাড়া নির্বাচন কমিশনার চারজন করা, রাষ্ট্রপতির জারিকৃত জরুরি অবস্থার মেয়াদ ১২০ দিন নির্দিষ্টকরণ, যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিতদের নির্বাচনে অযোগ্য ও ভোটার হতে না পারা, বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের ওপর রাখা, ৭০ অনুচ্ছেদ পরিবর্তন করে ’৭২-এর অনুরূপ করা, মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সংহতি রক্ষাসংবলিত ধারার বিলুপ্তি, সংবিধানে পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম তফসিল নামে নতুন তিনটি তফসিল সংযোজন করে সেখানে শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ অন্তর্ভুক্ত, শেখ মুজিবের ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের মধ্যরাত শেষে অর্থাত্ ২৬ মার্চের প্রথম দিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা এবং ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের জারিকৃত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সংবিধানে।মুন সিনেমার মামলায় সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর বেশ কিছু অংশ বাতিল ও পরবর্তী সময়ে শর্তসাপেক্ষে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল সংবলিত রায়ের আলোকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলসহ ৫১টি সুপারিশ সংবলিত একটি প্রতিবেদন গত ৮ জুন জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করে সংবিধান সংশোধনে গঠিত বিশেষ কমিটি। স্পিকার তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। আইন মন্ত্রণালয় বিল আকারে তৈরি করে ভেটিং শেষে গতকাল তা মন্ত্রিপরিষদের সভায় উপস্থাপন করে।প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দল সংবিধান সংশোধনের বিরুদ্ধে, বিশেষ করে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিলের বিরুদ্ধে তীব্র আপত্তি জানিয়ে আসছে। এরই মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিলের বিপক্ষে কঠোর অবস্থান নিয়েছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো দলীয় সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না বলে দলটি সাফ জানিয়ে দিয়েছে। প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের মতামত উপেক্ষা করে সংবিধান সংশোধনের একতরফা সিদ্ধান্তে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন। এরই মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বহাল রাখাসহ বিভিন্ন দাবিতে চলতি মাসে দুই দফায় ৪৮ ঘণ্টা হরতাল কর্মসূচি পালন করেছে বিরোধী দলগুলো।বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বিলে বলা হয়, সংবিধানের প্রস্তাবনার প্রথম অনুচ্ছেদে (১) ‘জাতীয় স্বাধীনতার জন্য ঐতিহাসিক যুদ্ধের’ শব্দগুলোর পরিবর্তে ‘জাতীয় মুক্তির জন্য ঐতিহাসিক সংগ্রামের’ শব্দগুলো প্রতিস্থাপিত হবে। (২) প্রস্তাবনার দ্বিতীয় অনুচ্ছেদের পরিবর্তে প্রতিস্থাপিত হবে—‘আমরা অঙ্গীকার করিতেছি যে, যে সকল মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদদিগকে প্রাণোত্সর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল—জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সেই সকল আদর্শ এ সংবিধানের মূলনীতি হইবে।’সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪-এ নতুন দফা (৫) সংযোজন করা হয়েছে—‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, প্রধান বিচারপতির কার্যালয় এবং সকল সরকারি ও আধাসরকারি অফিস, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের প্রধান ও শাখা কার্যালয়, সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস ও মিশনসমূহে সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করিতে হইবে।’অনুচ্ছেদ ৬-এর পরিবর্তে ‘৬ (১) বাংলাদেশের নাগরিকত্ব আইনের দ্বারা নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত হইবে।’ সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদের পর দুটি নতুন অনুচ্ছেদ (৭ক ও ৭খ) সন্নিবেশ করা হয়। সংবিধান বাতিল, স্থগিতকরণ ইত্যাদি অপরাধ বিষয়ে ৭ক অনুচ্ছেদে বলা হয়, ‘কোনো ব্যক্তি শক্তি প্রদর্শন বা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বা অন্য কোনো অসাংবিধানিক পন্থায় এই সংবিধান বা ইহার কোনো রদ, বাতিল বা স্থগিত করিলে কিংবা উহা করিবার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ বা ষড়যন্ত্র করিলে কিংবা এই সংবিধান বা ইহার কোনো বিধানের প্রতি নাগরিক আস্থা, বিশ্বাস বা প্রত্যয় পরাহত করিলে কিংবা উহা করিবার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ বা ষড়যন্ত্র করিলে তাহার এই কার্য রাষ্ট্রদ্রোহিতা হইবে এবং ঐ ব্যক্তি রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে দোষী হইবেন। দোষী ব্যক্তি সংসদের আইন দ্বারা ও অন্যান্য আইন দ্বারা অন্যান্য অপরাধের জন্য নির্ধারিত দণ্ডের মধ্যে সর্বোচ্চ দণ্ডে দণ্ডিত হইবে।’সংবিধানের মৌলিক কাঠামো সংক্রান্ত বিধানাবলী সংশোধন অযোগ্য করার জন্য নতুন অনুচ্ছেদ ৭(খ)-তে বলা হয়, ‘এ সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদে যাহাই কিছু থাকুক না কেন, সংবিধানের প্রস্তাবনা, প্রথম ভাগের সকল অনুচ্ছেদ, দ্বিতীয় ভাগের সকল অনুচ্ছেদ, নবম ক-ভাগে বর্ণিত অনুচ্ছেদসমূহের বিধানাবলী সাপেক্ষে তৃতীয় ভাগের সকল অনুচ্ছেদ এবং একাদশ ভাগের অনুচ্ছেদ ১৫০-সহ সংবিধানের অন্যান্য মৌলিক কাঠামো সংক্রান্ত অনুচ্ছেদগুলোর বিধানাবলী সংযোজন, পরিবর্তন, প্রতিস্থাপন, রহিতকরণ কিংবা অন্য কোনো পন্থায় সংশোধনের অযোগ্য হইবে।’অনুচ্ছেদ-৮-এর রাষ্ট্রীয় মূলনীতির দফা ১ ও ১(ক)-এর পরিবর্তে ‘(১) জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা এ নীতিসমূহ এবং তত্সহ এ নীতিসমূহ হইতে উদ্ভূত এই ভাগে বর্ণিত অন্য সকল নীতি রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি বলিয়া পরিগণিত হইবে’, প্রতিস্থাপন করা হয়।বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিষয়ে অনুচ্ছেদ ৯-এ প্রতিস্থাপন করা হয়, ‘ভাষাগত ও সংস্কৃতিগত একক সত্তাবিশিষ্ট যে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ ও সংকল্পবদ্ধ সংগ্রাম করিয়া জাতীয় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জন করিয়াছেন, সেই বাঙালি জাতির ঐক্য ও সংহতি হইবে বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তি।’ অনুচ্ছেদ ১০-এ প্রতিস্থাপিত হয়, ‘সমাজতন্ত্র ও শোষণমুক্তি—মানুষের উপর মানুষের শোষণ হইতে মুক্ত ন্যায়ানুগ ও সাম্যবাদী সমাজলাভ নিশ্চিত করিবার উদ্দেশ্যে সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হইবে।’ ধর্মনিরপেক্ষতা বাস্তবায়নের জন্য ‘(ক) সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িকতা, (খ) রাষ্ট্র কর্তৃক কোনো ধর্মকে রাজনৈতিক মর্যাদাদান, (গ) রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মীয় অপব্যবহার ও (ঘ) কোনো বিশেষ ধর্ম পালনকারী ব্যক্তির প্রতি বৈষম্য বা তাহার উপর নিপীড়ন-বিলোপ করা হইবে’, প্রতিস্থাপন করা হয়। অনুচ্ছেদ ১৮-এর পর নতুন অনুচ্ছেদ ১৮(ক) সন্নিবেশন করা হয় । এতে বলা হয়, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ সন্নিবেশিত হবে। এতে বলা হয়, ‘পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উন্নয়ন-রাষ্ট্র বর্তমান ও ভবিষ্যত্ নাগরিকদের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করিবে এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, জীববৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণীর নিরাপত্তা বিধান করিবে।’জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে মহিলাদের অংশগ্রহণ ও সুযোগের সমতা রাষ্ট্র নিশ্চিত করিবেন মর্মে অনুচ্ছেদ ১৯-এর দফা (৩) সংযোজন করা হয়। উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশ নামে ২৩ (ক) নতুন অনুচ্ছেদ সংযোজন করা হয়। এতে বলা হয়, ‘রাষ্ট্র বিভিন্ন উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের অনন্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ আঞ্চলিক সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।’অনুচ্ছেদ ৩৮-এর পরিবর্তে প্রতিস্থাপিত হবে, ‘সংগঠনের স্বাধীনতা—(১) জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতার স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত বাধা-নিষেধ সাপেক্ষে সমিতি বা সংঘ গঠন করিবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে : তবে শর্ত থাকে যে, কোনো ব্যক্তির উক্তরূপ সমিতি বা সংঘ গঠন করিবার কিংবা উহার সদস্য হইবার অধিকার থাকিবে না, যদি (ক) উহা নাগরিকদের মধ্যে ধর্মীয়, সামাজিক এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করিবার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়; (খ) উহা ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষ, জন্মস্থান বা ভাষার ক্ষেত্রে নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করিবার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়; উহা রাষ্ট্র বা নাগরিকদের বিরুদ্ধে কিংবা অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে জঙ্গি কার্য পরিচালনার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়; বা উহার গঠন ও উদ্দেশ্য এ সংবিধানের পরিপন্থী হয়।’সুপ্রিমকোর্টের বিচারক নিয়োগ বিষয়ে অনুচ্ছেদ ৯৫-এর পরিবর্তে ‘৯৫(১) প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পরামর্শ করিয়া রাষ্ট্রপতি অন্যান্য বিচারককে নিয়োগদান করিবেন’ প্রতিস্থাপিত হবে। বাহাত্তরের সংবিধানের আলোকে এ অনুচ্ছেদে ২ ও ৩ দফাও প্রতিস্থাপিত হবে।অবসরপ্রাপ্ত বিচারকদের বিচার বিভাগীয়/আধা বিচার বিভাগীয় পদে নিয়োগের বিষয়ে অনুচ্ছেদ ৯৯-এ বলা হয়, তারা প্রজাতন্ত্রের কোনো লাভজনক পদে নিয়োগ লাভের যোগ্য হবেন না। তবে আপিল বিভাগে ওকালতি বা কার্য করতে পারবেন।সংবিধানের ১০০ অনুচ্ছেদ ‘সুপ্রিমকোর্টের আসন—রাজধানীতে সুপ্রিমকোর্টের স্থায়ী আসন থাকিবে, তবে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন লইয়া প্রধান বিচারপতি সময়ে সময়ে অন্য যে কোনো স্থান বা স্থানসমূহ নির্ধারণ করিবেন, সেই স্থান বা স্থানসমূহে হাইকোর্ট বিভাগের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হইতে পারিবে’ প্রতিস্থাপন করা হয়।অনুচ্ছেদ ১১৬-এ অধস্তন আদালতসমূহের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা বিষয়ে প্রতিস্থাপিত করা হয়েছে বিচার-কর্মবিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিদের এবং বিচার বিভাগীয় দায়িত্ব পালনে রত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত থাকবে এবং সুপ্রিমকোর্টের পরামর্শক্রমে তা প্রযুক্ত হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে বলে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৮-এর দফা ১-এ তা প্রতিস্থাপন করা হয় ।ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির যোগ্যতা সংক্রান্ত ১২২ অনুচ্ছেদের দফা ২-এ সংশোধনী এনে (গ), (ঘ) ও (ঙ) বলা হয়, ‘তিনি ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ যোগসাজশকারী (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদেশের অধীন কোনো অপরাধের জন্য দণ্ডিত না হইয়া থাকেন’ প্রতিস্থাপন করা হবে।নির্বাচনের মেয়াদ অনুষ্ঠানের সময় সংক্রান্ত সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদে দফা ৩-এর পরিবর্তে ‘(৩) সংসদ সদস্যের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে—(ক) মেয়াদ অবসানের কারণে সংসদ ভাঙ্গিয়া যাইবার ক্ষেত্রে ভাঙ্গিয়া যাইবার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে এবং (খ) মেয়াদ অবসান ব্যতীত অন্য কোনো কারণে সংসদ ভাঙ্গিয়া যাইবার ক্ষেত্রে ভাঙ্গিয়া যাইবার পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে; তবে শর্ত থাকে যে, এই দফার (ক) উপদফা অনুযায়ী অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচিত ব্যক্তিগণ উক্ত উপদফায় উল্লিখিত মেয়াদ সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত সংসদ সদস্যরূপে কার্যভার গ্রহণ করিবেন না।’ সংশোধিত সংবিধানে জরুরি অবস্থার মেয়াদ ‘অনধিক একশত কুড়ি দিন’ ধার্য করে দেয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টা পদ সংক্রান্ত ১৪৭ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত হবে। সেই সঙ্গে এ অনুচ্ছেদ সংশোধনের সুপারিশ রয়েছে। অনুচ্ছেদ ১৫২-এর উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টা অভিব্যক্তির সংজ্ঞা বিলুপ্ত হবে। এ অনুচ্ছেদে সংশোধনীর সুপারিশ রয়েছে।৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৬ মার্চের স্বাধীনতা ঘোষণার টেলিগ্রাম এবং ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের জারিকৃত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র (অনুচ্ছেদ ১৫০ (২)—চতুর্থ তফসিলের পর ‘সংবিধানের পঞ্চম তফসিল, ষষ্ঠ তফসিল ও সপ্তম তফসিল’ সংযোজন করা হয়েছে বিলে

No comments:

Post a Comment