Wednesday 29 June 2011

রোববার হরতাল : তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিলের প্রতিবাদে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা কর্মসূচি ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আগামী ৫ জুন রোববার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট ও সমমনা দলগুলো। গতকাল পৃথক সংবাদ সম্মেলনে হরতালের এ ঘোষণা দেয়া হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার সুযোগ নেই বলে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার প্রেক্ষিতে বিরোধী দলের পক্ষ থেকে হরতালের মতো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো। বিএনপি ছাড়াও পৃথকভাবে হরতালের ঘোষণা দিয়েছে চারদলীয় ঐক্যজোটের শরিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), ইসলামী ঐক্যজোট, খেলাফত মজলিস, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাপ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ-ভাসানী) ও ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এনডিপি)।মঙ্গলবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতায় গতকাল দুপুরে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মগবাজারে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হরতালের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম। জোটগতভাবে বিরোধী দলের এটিই প্রথম হরতাল। এর আগে বিএনপি আরও ৪টি হরতালের কর্মসূচি দেয়। গত বছরের ২৭ জুন হরতালের প্রথম কর্মসূচি দেয় দলটি। এরপর গত বছরের ১৪ নভেম্বর, ৩০ নভেম্বর ও চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি হরতাল পালন করে বিএনপি। সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, আগামী নির্বাচনে সাফল্য লাভ করতে পারবে না নিশ্চিত হয়েই দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করে কৌশলে কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করতে চাচ্ছে সরকার। আমরা সরকারের এহেন সিদ্ধান্ত ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করছি।সংবিধান সংশোধন প্রক্রিয়ায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা না রাখার পক্ষে অবস্থানের কথা এরই মধ্যে জানিয়েছে সরকারি দল। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আদালতের রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা রাখার আর সুযোগ নেই। সরকারি দলের অবস্থান জানার পর মঙ্গলবারই দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। এরপর চারদলীয় জোট শরিকদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। এরপর বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, সরকারের এ সিদ্ধান্ত গণতন্ত্র ধ্বংস করার এক মহাপরিকল্পনা। এটি প্রকৃতপক্ষে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার নীল নকশা। এর ফলে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা বহুগুণ বেড়ে যাবে।মির্জা ফখরুল ৫ জুন সরকারি-বেসরকারি অফিস, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং যান চলাচল বন্ধ রেখে হরতাল কর্মসূচি সফল করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগের অধীনে অতীতে কোনো নির্বাচন নিরপেক্ষ হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না। আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো জাতীয় নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। মির্জা ফখরুল সরকারকে হুশিয়ার করে বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের পথে এগুলে বিএনপি কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ চিরকাল অন্যায় ও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে বিজয় অর্জন করেছে। এবারও সত্য-ন্যায় ও গণতন্ত্রের বিজয় অবশ্যম্ভাবী ইনশাল্লাহ। তিনি মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনের কথা উল্লেখ করে বলেন, এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি কলঙ্কময় অধ্যায়ের সূচনা করলেন। মাত্র চার সপ্তাহ আগে ২৭ এপ্রিল নিজে সংবিধান সংশোধনে গঠিত সংসদীয় বিশেষ কমিটির কাছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে মত দিয়েছিলেন। চার সপ্তাহ পর নিজের অবস্থান থেকে একেবারে ইউ টার্ন করে সাবেক প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সুর মিলিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে ‘অবৈধ ও অসাংবিধানিক’ বললেন এবং ‘এই ব্যবস্থা বহাল রাখার আর কোনো সুযোগ নেই’ বলে সিদ্ধান্ত দিলেন। সরকারের এ সিদ্ধান্ত দেশকে চরম রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সঙ্কটে ফেলে দেবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এতে দেশে অর্থনৈতিক ও নৈরাজ্য সৃষ্টি হলে তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। অনিশ্চয়তা, অস্থিতিশীলতা দেশের গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বিপন্ন করবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের ব্যাপারে আপিল বিভাগ যে রায় দিয়েছেন, তা দ্বিধাবিভক্ত ছিল বলে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা একটি মীমাংসিত বিষয়। এ নিয়ে কোনো বিতর্ক ছিল না। এই মীমাংসিত রাজনৈতিক ইস্যুতে রায় দেয়ার এখতিয়ার আদালতের আছে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। সুপ্রিমকোর্টের এ রায় জনগণ ও সংসদ মানতে বাধ্য নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে মামলার শুনানিকালে দেশের প্রবীণ আইনজীবীরা এ ব্যবস্থা রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন। দেশের বিশিষ্ট নাগরিক, সুশীল সমাজের সদস্য, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সম্পাদক ও সাংবাদিকরাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা রাখার পক্ষে সংসদীয় কমিটির কাছে মত দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, জনগণের সমস্যার ন্যূনতম সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদিসহ বিদ্যুত্, গ্যাস ও তেলের দাম বেড়েই চলেছে। তারপরও গ্যাস, বিদ্যুত্ ও পানির অভাব চারদিকে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ঢাকায় যানজট চরম আকার ধারণ করেছে। চাকরি নেই, কাজ নেই, পুঁজিবাজারে চরম ধস নেমেছে। ৩৩ লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হয়েছে। ব্যাংকে তারল্য সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করেছে। সাধারণ মানুষের জীবন দুঃসহ হয়ে পড়েছে। কাটা-ছেঁড়া করে সংবিধান তছনছ করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে ’৯৬ সালে জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামীসহ অন্য দলগুলোকে নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে একটি ইস্যু তৈরি করে বলেছিলেন, এ ব্যবস্থা ছাড়া ভোট ও ভাতের অধিকার রক্ষা করা যাবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে বহু রক্তপাত হয়েছে, সম্পদ বিনষ্ট হয়েছে। আজ তিনিই তার অবস্থান থেকে সরে এসে জাতিকে অনিশ্চয়তা, অস্থিতিশীলতা, সংঘাত ও সংঘর্ষের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। মির্জা ফখরুল জানান, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার ব্রিগেড, খাবার দোকান, ওষুধের দোকান ও হাসপাতালসহ যেসব এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হচ্ছে, সেসব এলাকা হরতালের আওতামুক্ত থাকবে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সহ-সভাপতি আবদুল্লাহ আল নোমান, যুগ্ম মহাসচিব আমানুল্লাহ আমান, রুহুল কবির রিজভী, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি এমপি, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলম, যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম নীরব, স্ব্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, নিলুফার চৌধুরী মনি এমপি, সহ-দফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি, কৃষিবিদ শামিমুর রহমান শামীম, আসাদুল করিম শাহীন, ছাত্রদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ। জামায়াতে ইসলামী : তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের সরকারি ঘোষণার প্রতিবাদে আগামী ৫ জুন দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। গতকাল মগবাজার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘সুপ্রিমকোর্টের রায়ে অবৈধ ঘোষণার পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার আর কোনো সুযোগ নেই’ মর্মে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে গেছে, সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আর থাকছে না। প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণা দেশবাসী প্রত্যাখ্যান করেছে। তিনি বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে অতীতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ না হওয়ার কারণেই ১৯৮০ সালের ৭ ডিসেম্বর জামায়াতে ইসলামীর তত্কালীন ভারপ্রাপ্ত আমির মরহুম আব্বাস আলী খান এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফর্মুলা পেশ করেন। ১৯৮৩ সালের ১৯ নভেম্বর তিনি বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে আয়োজিত এক বিরাট জনসভায় এ ফর্মুলা আবার তুলে ধরেন। পরবর্তীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি গণদাবিতে পরিণত হয়। তিনি বলেন, স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির নেতৃত্বে ৭ দল, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৫ দল এবং জামায়াতে ইসলামীর যুগপত্ আন্দোলন প্রচণ্ড রূপ ধারণ করলে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বৈরশাসনের পতন হয় এবং ওইদিন তত্কালীন প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয়। সে সরকারের অধীনে ১৯৯১ সালে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির জন্য জামায়াত, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে সন্নিবেশিত হয়। তারপর থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচন দেশ-বিদেশে ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। তিনি বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন না হওয়ার প্রেক্ষাপটেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু হয়। এ অবস্থা এখনও বিরাজ করছে। তাই এর প্রয়োজনীয়তা এখনও শেষ হয়ে যায়নি। এ ব্যবস্থা সংবিধানে রাখার ব্যাপারে জাতি আজও ঐক্যবদ্ধ। সংসদীয় বিশেষ কমিটি সংবিধান সংশোধনের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পরামর্শ গ্রহণের জন্য যেসব বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিককে ডেকেছিল, তারাও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা সংবিধানে বহাল রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার আদালতের কাঁধে বন্দুক রেখে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছে। দেশের জনগণ এখনও বিশ্বাস করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার কোনো বিকল্প নেই। কোনো দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন সম্ভব নয়। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকার প্রশাসন, পুলিশ ও বিচার বিভাগকে যেভাবে দলীয়করণ করেছে, তাতে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ কোনো নির্বাচন হতেই পারে না। জাতি তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিধান সংবিধানে বহাল রাখা হোক—তা আন্তরিকভাবে কামনা করে।এটিএম আজহার বলেন, আওয়ামী লীগ ফখরুদ্দীন-মইনুদ্দিনের জরুরি সরকারের নীল নকশার ডিজিটাল কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে। তারা কোনো নির্বাচনী ওয়াদা ও জনসমস্যার সমাধান করতে পারেনি। সবক্ষেত্রে ব্যর্থতার কারণে সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে গণবিচ্ছিন্ন এই সরকার ক্ষমতায় আসতে পারবে না বুঝতে পেরেই দলীয় সরকার ও আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন করে ষড়যন্ত্রের পথে পুনরায় ক্ষমতায় আসার পাঁয়তারা করছে। তারা এ উদ্দেশ্যেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে। জাতি তাদের এ ঘোষণা কখনও মেনে নেবে না। পরে তিনি ৫ জুন হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তবে যেসব এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, তা হরতালের আওতামুক্ত থাকবে বলে জানান। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক অধ্যাপক মো. তাসনীম আলম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, মাওলানা এটিএম মাসুম, মুহাম্মাদ আবদুর রব, ঢাকা মহানগরী সেক্রেটারি হামিদুর রহমান আযাদ এমপি, কেন্দ্রীয় সহকারী প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ ও ঢাকা মহানগরী নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) : বিজেপি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ ও মহাসচিব শামীম আল মামুন গতকাল এক যুক্ত বিবৃতিতে ৫ জুন ঢাকাসহ সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করেন। তারা হরতাল কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। খেলাফত মজলিস : খেলাফত মজলিসের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গতকাল বিজয়নগরে অনুষ্ঠিত সংগঠনের নির্বাহী কমিটির সভায় আগামী ৫ জুন ঢাকাসহ সারাদেশে হরতাল আহ্বানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন দলের আমির অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক। জাগপা : বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) মুহাম্মদপুরের দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আগামী ৫ জুন ঢাকাসহ সারাদেশে হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করে। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠন সভাপতি শফিউল আলম প্রধান। উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুত্ফর রহমান ও ঢাকা মহানগর সভাপতি আসাদুর রহমান খান। বাংলাদেশ ন্যাপ : বাংলাদেশ ন্যাপ তার নয়াপল্টনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে ৫ জুন ঢাকাসহ সারাদেশে হরতাল আহ্বান করে। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি। সংগঠনটি আজ ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ, ৩ জুন জেলায় জেলায় সমাবেশ ও ৪ জুন হরতারের সমর্থনে সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করে।
বাংলাদেশ লেবার পার্টি : সংগঠনটি তার ফকিরাপুলের কার্যালয়ে নির্বাহী কমিটির সভা করে আগামী ৫ জুন ঢাকাসহ সারাদেশে হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করে। এতে সভাপতিত্ব করেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান।
ন্যাপ (ভাসানী) : সংগঠনটির চেয়ারম্যান শেখ আনোয়ারুল হক ও মহাসচিব হাসরাত খান ভাসানী গতকাল এক বিবৃতিতে আগামী ৫ জুন ঢাকাসহ সারাদেশে হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশ মুসলিম লীগ : সংগঠনটির স্থায়ী কমিটির এক জরুরি সভায় আগামী ৫ জুন ঢাকাসহ সারাদেশে হরতাল কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়। গতকাল বনানীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি জিএ খান অ্যাডভোকেট।
এনপিপি : সংগঠনটির প্রেসিডিয়ামের এক জরুরি বৈঠকে আগামী ৫ জুন ঢাকাসহ সারাদেশে হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। গতকাল কাকরাইলের দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন দলটির চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নিলু

No comments:

Post a Comment