Wednesday 10 August 2011

ঈদ সামনে রেখে দেশে চাঁদাবাজির মহোত্সব চলছে : ওবায়দুল কাদের

স্টাফ রিপোর্টার
ঈদকে সামনে রেখে দেশজুড়ে চাঁদাবাজির মহোত্সব চলছে বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, কাঁচাবাজার, ফুটপাত, লঞ্চঘাট থেকে শুরু করে সর্বত্রই ফ্রি-স্টাইলে চাঁদাবাজি চলছে। এ সত্যকে চাপা দিয়ে লাভ হবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এসব কঠোরহস্তে দমন করতে হবে।
গতকাল রাজধানীর মিরপুর বাঙলা কলেজে জাতীয় শোকদিবস উপলক্ষে কলেজ ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় তিনি ছাত্রলীগের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের কঠোর সমালোচনা করেন।
নিত্যদিনের বেড়ে চলা দুর্ভোগ ও সরকারের ভাবমর্যাদা নষ্ট করার পেছনে মন্ত্রী, ছাত্রলীগ ও প্রশাসনের ভূমিকাকে দায়ী করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের দক্ষ টিম লিডার আছেন। কিন্তু শক্তিশালী টিম নেই। জনদুর্ভোগ কমাতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সরকারের দায়িত্বশীলদের সমন্বয় নেই।
পুঁজিবাজারে বিক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীদের ফাটকাবাজ বলা বা রমজানে কম খেতে মন্ত্রীদের পরামর্শের সমালোচনা করে তিনি মন্ত্রীদের উদ্দেশে বলেন, ফ্রি-স্টাইলে কথা না বলে কাজের কাজ করুন। কম কথা বলে বেশি কাজ করুন। ভুক্তভোগী জনগণ এসবের সরব প্রতিবাদ না জানালেও আগামী নির্বাচনে নীরব ভোটে ক্ষমতাসীন দল এর জবাব পাবে। তিনি সরকারের ভাবমর্যাদা কতোটা খারাপ হয়ে উঠছে তা বিবেচনায় নিয়ে দায়িত্বশীলদের সতর্ক হওয়ার পরামর্শ
দেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিদ্যুতের উত্পাদন রেকর্ড ছাড়িয়েছে জানানো হলেও সাহরি ও ইফতারে লোডশেডিং কমেনি। সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গণপিটুনি ও পুলিশের একের পর এক অঘটন সরকারের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ন করছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
খালেদা বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে চায়
সকালে স্বাধীনতা চিকিত্সক পরিষদ (স্বাচিপ) আয়োজিত শোকদিবসের আলোচনায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা অভিযোগ করেছেন, বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া সুপরিকল্পিতভাবে বিচারব্যবস্থা ধ্বংস করতে চায়। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার কার্যকর, খালেদা জিয়ার বাড়ির রায়, তারেক-কোকোর মুদ্রা পাচার মামলা, যুদ্ধাপরাধ মামলা নিয়ে বেগম জিয়া উচ্চ আদালতের ওপর ক্ষুব্ধ। তাই তিনি উচ্চ আদালতকে সহ্য করতে পারেন না।
রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বঙ্গবন্ধু কখনও ক্ষমা করেননি। তাদের ক্ষমা করে এদেশে প্রতিষ্ঠিত করেছে জিয়াউর রহমান। তিনি কটাক্ষ করে বলেন, পাকিস্তানের প্রতি জিয়াউর রহমানের একটা ঋণ আছে। তার বাবা-মায়ের কবর পাকিস্তানে। তাই পাকিস্তানপ্রেমীদের তিনি খুব পছন্দ করতেন।
দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ বলেন, হাইকোর্ট ধ্বংস করার চেষ্টা থেকেই সেদিন আমিনীর নিজস্ব আইনজীবী থাকা সত্ত্বেও বিএনপির আইনজীবীরা আদালতে হট্টগোল পাকাতে গিয়েছিল।
তিনি প্রশ্ন রাখে, পাপিয়া উচ্চ আদালতের কোনো আইনজীবী না। তারপরও আদালতে তারা কেন গেলেন। বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া সুপরিকল্পিতভাবে বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে চায় বলেই তার দলের আইনজীবীরা সেদিন আদালতে গিয়ে হট্টগোল করে। মাহবুব-উল-হানিফ বলেন, মনে-প্রাণে খালেদা জিয়া এদেশের স্বাধীনতা চাননি। স্বাধীনতা চাইলে যে সংবিধানের জন্য ৩০ লাখ দেশপ্রেমিক শহীদ হয়েছে সেই সংবিধান ছুড়ে ফেলতে চাইতেন না।
স্বাচিপ সভাপতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ. ফ. ম. রুহুল হকের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি ডা. মাহমুদ হাছান, স্বাচিপের সাধারণ সম্পাদক ডা. ইকবাল আর্সালান, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান ভুঁইয়া ডাব্লু। উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী মুজিবুর রহমান ফকির, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত প্রমুখ।

No comments:

Post a Comment